ছোট বাচ্চার মায়েরা বিশেষ করে যারা প্রথমবার মা হয়েছে প্রায়শই একটু দুশ্চিন্তায় থাকে যে কখন শিশুকে সলিড খাওয়ানো শুরু করবে,কি ধরনের খাবার দিবে,কতটুকু পরিমান খাবার বাচ্চাকে কতবার দিবে ইত্যাদি ইত্যাদি।আর চিন্তা করাটা খুব সাভাবিক কারন প্রত্যেক মা ই চায় বাচ্চা যেন ঠিকমত খাবার খায় এবং সুস্থ থাকে।
আমাদের দেশে সাধারনত ৬ মাস পর থেকে মানে ১৮০ দিন পুরন হবার পর থেকে শিশুকে সলিড খাবার খাওয়ানো শুরু করতে বলা হয়ে থাকে।শিশুর জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাবে।এরপর ৭ মাসে পরলে বুকের দুধের পাশাপাশি অল্প অল্প করে সলিড খাবার দিতে হবে কারন ৬ মাস পর থেকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধে বাচ্চার সব পুস্টি মেটানো সম্ভব হয় না।শিশুর প্রথম বাড়তি খাবার বাসায় তৈরী করে খাওয়ানোই ভাল।
এ ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে খাবারটি বাচ্চাকে দিচ্ছেন সেটা যেন সহজপাচ্য হয়।সেটাতে অ্যালার্জি কিংবা গ্যাস হচ্ছে কিনা(অনেক সময় মা,বাবা বা পরিবারের অন্য কারো নিদ্রিস্ট কোন খাবারে অ্যালার্জি থাকলে বাচ্চার ও সেই সমস্ত খাবারে অ্যালার্জি হবার সম্ভাবনা থাকে)ইত্যাদি বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।
বাহিরের প্যাকেটজাত খাবারে অনেক ধরনের কৃত্রিম রং এবং প্রিজারভেটিভ দেয়া থাকে যা বাচ্চার সাস্থের জন্য ক্ষতিকর।দাম বেশী কিন্তু কম পুস্টিকর,তাই বাচ্চাদের ছোট থেকেই ঘরে তৈরী খাবার খেতে অভ্যস্ত করা উচিত।
শিশুর প্রথম বাড়তি খাবার
- শুরুতেই বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় ফল কিংবা সব্জি চটকে পাতলা পিউরি হিসেবে খাওয়াতে হবে।চাপা কলা চটকে প্রয়োজনে বুকের দুধ বা পানি দিয়ে পাতলা করে খাওয়াতে পারেন।এছাড়াও আপেল,নাশপাতি সিদ্ধ করে চটকে দিতে পারেন।
- বিভিন্ন ধরনের সব্জি যেমন মিষ্টি কুমড়া,মিষ্টি আলুও সিদ্ধ করে চটকে পাতলা করে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন।
- এছাড়াও বাড়িতেই চাল গুড়ো করে চালের সুজি বানিয়ে পাতলা করে রান্না করে দিতে পারেন।
- শুরুতে খুব অল্প পরিমানে খাবার তৈরী করবেন এবং চেস্টা করবেন বাসী না করে টাটকা খাওয়াতে।বাচ্চার খাবার তৈরী করার আগে অবশ্যই আপনার হাত ধুয়ে নিবেন এবং যে পাত্রে খাবার তৈরী করবেন,চামচ,বাটি প্রভিতি বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে জীবানু মুক্ত করে নিবেন।
- প্রথম সপ্তাহে শিশুকে দিনে একবার সলিড খাবার দিন।১-২ চা চামচ দিয়ে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে পরিমান বাড়াবেন।কয়েক ধরনের খাবার এক সাথে খাওয়ানর চেস্টা করবেন না,একটি খাবার দেবার অন্ত্ত ৩ দিন পর আরেকটি খাবার দিবেন।
- বাচ্চাদের পাকস্থলি খুব ছোট থাকে তাই এই সময় বেশি খেতে চায় না,এটা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই।বাচ্চাকে কখনই শুইয়ে খাওয়াবেন না,এতে করে শাসনালিতে খাবার চলে যেতে পারে যার ফলে বাচ্চার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
- বাচ্চাদের শক্ত খাবার শুরু করার পর বাচ্চার পায়খানার/পটির কিছু পরিবরতন আসে।অনেক সময় পটি বেশি শক্ত বা নরম হয়ে যা,যেটা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে আসে।
- বাচ্চাকে বুকের দুধের পাশাপাশি চাহিদামত পানি খাওয়াতে হবে।এক বছরের নিচের শিশুদের খাবারে লবন / চিনি না দেয়াই ভাল।
যে কোন ধরনের নতুন খাবার বাচ্চাকে দেয়ার আগে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।