সাধারনত শিশুরা জ্বর সর্দি কাশি হলে খাবার খেতে চায়না কারন এ সময়ে তাদের মুখের রুচি কমে যায়।এই কারনে বেশীরভাগ মা বাবা দুশ্চিন্তাই পরে যায় যে বাচ্চাকে কোন খাবার দিলে তারা পছন্দ করে খাবে এবং দ্রুত সু্স্থ হয়ে উঠবে।মুলত এসময়ে শিশুদের অল্প অল্প করে এমন খাবার দিতে হবে যেগুলি সহজে হজম হয়।
- ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের সর্দি কাশির সময় শুধু মাত্র মায়ের বুকের দুধ অথবা ফরমুলা মিল্ক খাওয়াবেন।
- ৬ মাসের বেশী বয়সী শিশুদের সর্দি কাশির সময় কম তেল ঝাল মশলা দিয়ে তৈরী সহজপাচ্য খাবার অল্প অল্প করে খাওয়াতে হবে।
- বেশী বেশী করে তরল জাতীয় খাবার যেমন-কুসুম গরম পানি,টাটকা ফলের জুস,স্যুপ ইত্যাদি খাওয়াতে হবে যাতে করে শিশুর পানি শুন্যতা না হয়।
- বাচ্চাকে বেশী জোড়াজুড়ি করে খাওয়াবেন না,সময় দিন বাচ্চার রুচি ধীরে ধীরে ফিরে আসবে।
পর্যাপ্ত পরিমানে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে
বাচ্চা যদি বুকের দুধ খায় তবে বার বার বুকের দুধ খাওয়ানর চেস্টা করুন।এসময় বাচ্চা যাতে করে পানিশুন্য না হয়ে পরে এর জন্য বেশী বেশী তরল খাবার দিতে হবে।বুকের দুধে অ্যান্টিবডি থাকে যা বাচ্চাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলে।
ভাতের পানি
শিশুদের সর্দি কাশি হলে খুব তারাতারি দুর্বল হয়ে পরে তাই এই সময়ে তারা ভাত কিংবা শক্ত খাবার একেবারেই খেতে চায়না।এময়ে বাচ্চাদের ভাতের পানি বা ভাতের তৈরী স্যুপ হ্তে পারে আদর্শ একটি খাবার এবং এতে করে দ্রুত Energy ফিরে পাবে।
বার্লির পানি
বার্লি অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার।বিশেষ করে শিশুদের সর্দি কাশি হলে বার্লি খাওয়ালে রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়ে থাকে।বার্লি সহজেই হজম হয় এবং খুব তারাতারি শক্তি প্রদান করে।এছাড়াও বার্লিতে বিভিন্ন রকমের ভিটামিনস,প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে যা বাচ্চাদের দ্রুত সুস্থ করে তোলে।
হলুদ মিশানো দুধ
হলুদ কে সর্দি কাশির প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক বলা হয়ে থাকে।শিশুদের খাবারে হলুদ ব্যাবহার করা অত্যন্ত জরুরি,কারন হলুদ রক্তকে পরিষোধিত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।এক বছরের বেশী বয়সী শিশুদের হলুদ মেশানো দুধ সপ্তাহে একবার করে দিলে সর্দি কাশি অনেকটাই কমে যাবে।
তুলশী এবং আদা চা
সর্দি কাশি দ্রুত ভাল করতে আদা এবং তুলশী দুটোই খুব উপকারি।বড়দের পাশাপাশি ছোট শিশুদেরও আদা তুলশী পাতার চা করে খাওয়াতে পারেন,এতে করে বাচ্চাদের বন্ধ নাক খুলে যাবে এবং গলা ব্যাথা হলে আরাম পাবে।
মধু
মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে থাকে।বাচ্চাদের সর্দি কাশি এবং গলা ব্যাথা সারাতে মধু ওষুধের চেয়েও বেশি কার্যকরী।বাচ্চারা যদি খুশখুশে কাশির জন্য রাত্রে ঘুমাতে না পারে তবে ২ চামচ মধু খাইয়ে দিন,দেখবেন ম্যাজিকের মত গলার খুশ খুশে কাশি কমে গেছে।প্রতিদিন বাচ্চাদের মধু খাওয়ালে ঘন ঘন সর্দি কাশি হবার সম্ভাবনা কমে যায়।তবে অবশ্যই ১ বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের মধু খাওয়াবেন না।
সব্জির স্যুপ
বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে তৈরী করা স্যুপ বাচ্চাদের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার।সাধারনত সর্দি কাশি হলে বাচ্চারা সহজেই কিছু খেতে চায় না তাই এই সময়ের একটি আদর্শ খাবার হতে পারে স্যুপ।বিভিন্ন ধরনের সবজিতে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য জরুরি ভিটামিন ও খনিজ পুষ্টি উপাদান থাকে।এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকে প্রচুর পরিমাণে।
বিভিন্ন ধরনের ডাল জাতীয় খাবার
সাধারনত বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে গেলে খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং এতে করে বাচ্চাদের ওজন কমে যায়।তাই এসময়ে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের ডাল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।এছাড়াও ডালে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে যা সর্দি কাশির জীবানুর বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে।বিভিন্ন ধরনের ডাল দিয়ে বেসন তৈরী করে বাচ্চাদের বেসনের হালুয়া(বেসন শিরা)বানিয়ে খাওয়াতে পারেন।এটা খুবই টেস্টি এবং মিস্টি একটি খাবার যেটা বাচ্চারা খেতে খুব পছন্দ করে।
চিকেন স্যুপ
চিকেন স্যুপ বাচ্চাদের জন্য অত্যন্ত পছন্দের পুষ্টিকর একটি খাবার।শিশুদেরও জ্বর,ঠান্ডা এবং কাশির সময় চিকেন স্যুপ একটি উপাদেয় খাবার।এটি বন্ধ নাক এবং কফ রিলিফে সাহায্য করে।এছাড়াও এই স্যুপে চিকেনের পাশাপাশি পিয়াজ,রসুন,আদা থাকে যা বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।দেখে নিন বাড়িতেই কিভাবে তৈরী করবেন চিকেন স্যুপ
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
বেশ কিছু গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি সর্দি কাশির সময়ে জীবানুর বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং immune system কে improve করে থাকে।সর্দি কাশির সময়ে শিশুরা খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল শিশুর মুখে রুচি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে থাকে।
বিভিন্ন ধরনের ফল এবং সবজি যেমনকমলা,টমেটো,স্ট্রবেরি,পেয়ারা,লেবু,ব্রকলি এবং আলুতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে।এসময়ে বাচ্চাদের টমেটোর স্যুপ তৈরী করে খাওয়াতে পারেন।