প্রেগন্যানসির সময়টা নিঃসন্দেহে একটা মেয়ের জীবনের সবচেয়ে স্পেশাল সময়।সব মায়েরাই চায় তার অনাগত সন্তান যেন সুস্থ্য অবস্থায় পৃথিবীর মুখ দেখে।মোটামুটি বেশীরভাগ গর্ভবতী মহিলা গর্ভাবস্থায় কম বেশী শারিরীক সমস্যায় ভুগে থাকে।তার মধ্যে বুকে জ্বালাপোড়া কিংবা এসিডিটি(Heartburn During Pregnancy)সবচেয়ে কমন একটি সমস্যা।গর্ভাবস্থায় এই সমস্যাটা প্রোকট আকার ধারন করে কারন এই সময়ে একজন মায়ের শরিরে বিভিন্ন ধরনের হরমোনের পরিবর্তন আসে এবং পাকস্থলির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
যেহেতু গর্ভাবস্থায় চাইলেই যেকোন ধরনের ঔষধ খাওয়া যায়না,তাই গর্ভবতী মা তার জীবন ধারনের কিছু পরিবর্তন এবং খাবারদাবার মেনে চললে এই কস্টকর অবস্থা থেকে মোটামুটি পরিত্রান পেতে পারে।
যে সমস্ত খাবার খেলে গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া বেড়ে যায়
- ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় – যেমন চা,কফি,সফট ড্রিংকস,সোডা পানি।
- চীজ জাতীয় খাবার – পনির,বিভিন্ন ধরনের চীজ।
- লাল মাংস – গরু,মহিষ,খাসির মাংস।
- অতিরিক্ত তেল ঝাল মশলা যুক্ত খাবার – চানাচুর।
- বেকারী পন্য – কেক,প্রেস্টি।
- চকোলেট।
- কিছু কিছু টক জাতীয় খাবার – টমেটো।
- এলকোহল।
- ধুমপান।
- অতিরিক্ত খাবার একসাথে খাওয়া।
- অন্যকোন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।
- দুঃশ্চিন্তা।
বেশ কিছু নিয়ম মেনে চললে গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া কিংবা এসিডিটি থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়
- একেবারে বেশি পরিমানে খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বাড়ে বাড়ে খেতে হবে।
- খাবার ধীরে ধীরে ভাল করে চিবিয়ে খেতে হবে।
- রাতে দেরি করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
- অতিরিক্ত তেল ঝাল মশলা যুক্ত খাবার না খেয়ে অল্প তেল মশলার তরকারি খেতে হবে।
- খাবার পর পরই না শুয়ে অন্তত এক ঘন্টা আরাম করে বসে কিংবা হেলান দিয়ে থাকতে হবে,সবচেয়ে ভাল হয় যদি কিছু সময় হাটাহাটি করা যায়।
- আরামদায়ক ঢিলে পোশাক পরতে হবে।
- ঘুমানোর সময়ে মাথে উচু করে বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।
- প্রচুর পরিমানে পানি খেতে হবে।
- প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধ খেতে হবে।
প্রাকৃতিক ঘরোয়া চিকিৎসা(Natural Home Remedy)
-
লেবু পানি
লেবুর রস বুক জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে থাকে।এক গ্লাস পানিতে লেবুর রস এবং মধু দিয়ে খেতে পারেন।এতে করে অনেকটাই আরাম মিলবে।
-
আদা
গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া কিংবা এসিডিটি কমাতে আদা খুব ভাল কাজে দেয়।প্রতিদিনের রান্নায় আদা মশলা হিসেবে ব্যাবহার করতে পারেন।এছাড়াও আদা চা কিংবা আদার ক্যানডি ও খেতে পারেন।
-
মৌরি
২ চামচ মৌরি ১ কাপ পানিতে বেশ কিছুক্ষন ফুটিয়ে নিন।এবার ঠান্ডা করে ছেকে প্রয়োজনে মিস্টি কিছু যোগ করে পানিটা খেয়ে নিন।
-
এলোভেরা জুস
এলোভেরা জুসও গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
-
ডাবের পানি
গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া কিংবা এসিডিটি কমাতে ডাবের পানি খুবই কার্যকরি।এটা জ্বালাপোড়া কমিয়ে দ্রুত আরাম দেয়।
-
আপেল সাইডার ভিনেগার
এসিডিটি কমাতে আপেল সাইডার ভিনেগার খেতে পারেন।
-
দই
গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া কিংবা এসিডিটি কমাতে দই খেতে পারেন।বিভিন্ন ধরনের ফল দই দিয়ে মাখিয়ে সালাদের মত করে কিংবা দই দিয়ে লাচ্ছি বানিয়ে খেতে পারেন।
-
দুধ
নিয়মিত দুধ খেলে গর্ভাবস্থায় বুকে জ্বালাপোড়া অনেকটাই কম হয়।
-
চুইংগাম চিবালেও বুকে জ্বালাপোড়া কম হয়।
-
তাজা ফলের জুস
বিভিন্ন ধরনের তাজা ফলের জুস যেমন আপেল কিংবা গাজরের জুস করে খেতে পারেন।