প্রেগনেন্সি সময়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারনা এবং সঠিক তথ্য

By | November 27, 2018


ভুল ধারনা → বাচ্চা ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের অবস্থানের উপর নির্ভর করে
প্রকৃত ঘটনা→ বহুকাল আগে থেকেই অনেকেই মনে করে থাকে যে স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের অবস্থানের উপর ছেলে বাচ্চা হবে না মেয়ে বাচ্চা হবে তা নির্ভর করে।কিন্তু ব্যাপারটি মোটেও সত্যিনা।কারন স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের এমন কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই যেটা থেকে বাচ্চার লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়।তাই এটি একটি ভুল ধারনা।

ভুল ধারনা→তিন মাস সম্পূর্ণ হওয়ার আগে প্রেগনেন্সির খবর কাউকে দেয়া উচিত না
প্রকৃত ঘটনা-→ অনেক সময় বাড়ির মুরুব্বিরা পেটে বাচ্চা আসলে তিন মাসের আগে বাহিরের আত্মীয় স্বজন,বন্ধু বান্ধব কে এই খবর দিতে চাননা।কারন তারা মনে করে আগে থেকে বললে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ভুল ধারনা→গর্ভবতী মা পেঁপে খেতে পারবে না
প্রকৃত ঘটনা-→ আমাদের দেশে গর্ভবতী মাকে পেপে খেতে নিষেধ করা হয়ে থাকে কারন পেপের মধ্যে এমন এক ধরনের উপাদান থাকে যা অনেক সময় গর্ভপাত ঘটায়।গর্ভাবস্থা কাঁচা পেপে না খাওয়াই ভাল।কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশে গর্ভাবস্থাও কাচা পেপের বিভিন্ন খাবার খেতে ডাক্তাররা নিষেধ করেন না।তবে পাকা পেপে খেতে কোন নিষেধ নেই।

ভুল ধারনা→গর্ভাবস্থায় জাফরান খেলে পেটের বাচ্চা ফর্সা হয়
প্রকৃত ঘটনা→ অনেকেই মনে করে থাকে যে গর্ভাবস্থায় জাফরান খেলে পেটের বাচ্চা ফর্সা হবে যেটা একেবারেই ভুল ধারনা।জাফরানে বেশকিছু ভিটামিন এবং খনিজ আছে যা স্বাস্থ্য এর জন্য উপকারি কিন্তু জাফরান খেলে পেটের বাচ্চা ফর্সা হবে এটা একদমই ঠিকনা।

ভুল ধারনা→মেয়ে বাচ্চা হলে গর্ভাবস্থায় মা সুন্দর হয় আর ছেলে হলে মায়ের চেহারা খারাপ হয়ে যায়
প্রকৃত ঘটনা→ আমাদের সমাজে একটা প্রচলিত কথা আছে যে “মেয়ের মা সুন্দর আর ছেলের মা বান্দর”যা ডাহা ভুল ধারনা।গর্ভাবস্থায় মায়ের চেহারার উজ্জ্বলতা মুলত বিভিন্ন ধরনের হরমোনের পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত।তাই এর বৈজ্ঞানিক কোন সত্যতা নেই।

ভুল ধারনা→পেটের আকার দেখে বাচ্চা ছেলে না মেয়ে ধারনা করা
প্রকৃত ঘটনা→ মুরুব্বিরা অনেক সময় গর্ভবতী মায়ের পেটের আকার দেখে অনাগত বাচ্চার লিঙ্গ নির্ধারণ করে থাকে যেটার কোন বৈজ্ঞানিক কোন সত্যতা নেই এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের ধারনা ভুল প্রমাণিত হয়।

ভুল ধারনা→চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণের সময় গর্ভবতী মা শোয়া-বসা বা কিছু খেতে পারবে না
প্রকৃত ঘটনা→ চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণের সময় গর্ভবতী মায়েরা ভয়ে আতংকিত হয়ে পরে।অনেকেই মনে করে এসময়ে যদি গর্ভবতী মা কোন কিছু কাটে তবে বাচ্চা ঠোট কাটা/তালু কাটা হয়ে জন্ম নিবে।অনেকেই আবার এই সময়ে গর্ভবতী মাকে শুতে কিংবা বসতে দেয়না।আসলে এগুলি একধরনের কুসংস্কার যার কোন ধর্মীয় বা বৈজ্ঞানিক সত্যতা নেই।

ভুল ধারনা→গর্ভাবস্থায় মরা বাড়িতে কিংবা অসুস্থ কাউকে দেখতে যেতে পারবে না
প্রকৃত ঘটনা→ অনেকেই আছেন যারা কেউ মারা গেলে সেই বাড়িতে গর্ভবতী মহিলাদের যাওয়া একদমই পচ্ছন্দ করে না,আসলে এটা একটা মানসিক ব্যাপার।তবে কেউ মারা গেলে সেখানে গেলে মন বিষণ্ণ হয়ে যায় এবং অসুস্থ রোগীর আসেপাশে রোগ জীবানু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বিধায় যাওয়া না যাওয়াটা যার যার ব্যাক্তিগত ব্যাপার।

ভুল ধারনা→গর্ভবতী মা সুন্দর দৃশ্য বা সুন্দর মানুষ দেখলে পেটের বাচ্চা সুন্দর হবে
প্রকৃত ঘটনা→ গর্ভবতী বেশীর মহিলারাই বিশ্বাস করে সে যদি সুন্দর মানুষ কিংবা সুন্দর দৃশ্য বেশী বেশী করে দেখে তবে তার গর্ভের শিশুও দেখতে সুন্দর হবে।আসলে এর কোন বৈজ্ঞানিক সত্যতা নেই।শিশুর চেহারা কেমন হবে তা মুলত জেনেটিক্স এর উপরে নির্ভর করে।

ভুল ধারনা→গর্ভবতী মা কিছু খেতে চাইলে যদি না খাওয়ানো হয় তবে বাচ্চার লালা ঝরবে
প্রকৃত ঘটনা→ একেবারেই ভুল কথা,বাচ্চাদের লালা ঝরার বিষয় টি একেবারেই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।সময়ের সাথে সাথে এটি ঠিক হয়ে যায়।

ভুল ধারনা→বাচ্চা জন্মের আগে বাচ্চার জন্য কোনকিছু কেনাকাটা উচিত না
প্রকৃত ঘটনা→ আমাদের দেশের বেশীরভাগ মুরুব্বিরা বাচ্চা জন্মানোর আগে বাচ্চার জন্য কোন কিছু কেনাকাটা করতে নিষেধ করে থাকেন যেটা এক ধরনের কুসংস্কার ।এর অন্যতম কারন হচ্ছে আগেকার দিনে নবজাতকের মৃত্যুহার অনেক বেশী ছিল ফলে কোন কারনে নবজাতকের মৃত্যু হলে আগে থেকে কেনাকাটা করে রাখা জিনিসগুলি দেখে বেশী কস্ট হত।কিন্তু এখন দিন বদলে গেছে আর শিশু মৃত্যুহারও অনেক কমে গিয়েছে আর মানুষের চিন্তা ধারাতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে।

ভুল ধারনা→বাচ্চার বয়স ৪০ দিন না হওয়া পর্যন্ত মা-বাচ্চা বাসার বাহিরে যেতে পারবে না
প্রকৃত ঘটনা→ সাধারনত নবজাতক শিশুর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অনেক কম থাকে এবং ত্বক খুব বেশী সেনসিটিভ থাকে ফলে খুব সহজেই সংক্রমণের আশংকা থাকে তাই বাচ্চা একটু বড় হওয়ার আগে বাসার বাহিরে যতটা সম্ভব কম যাওয়াই ভাল।তবে সেটা যে ৪০ দিনই হবে এমন কোন কথা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *